শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রেম ও পাওনা টাকার কারণেই নির্মমভাবে খুন হন নবীগঞ্জের বহুল আলোচিত পাহাড়পুর গ্রামের জাহেদ হোসেন। ঘটনার ১৪ দিনের মধ্যে হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটন করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। শুক্রবার (২০ মার্চ) বিকেলে নবীগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা করেন নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল এএসপি মো. পারভেজ আলম চৌধুরী।
এ সময় তিনি বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহারপুর গ্রামের মো. রফিক মিয়ার ছেলে শেরপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহেদ হোসেন (২২) গত ০৪ মার্চ ২০২০ ইং বুধবার রাতে শেরপুর থেকে তার দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ী যাওয়ার পথে মজলিশপুর ও পারকুল পাওয়ার প্লান্টের রাস্তার মধ্যবর্তী স্থানে তার মোটরসাইকেল গতিরোধ করে একদল দুর্বত্ত তাকে খুন করে তার লাশ রাস্তার পাশেই ফেলে রেখে চলে যায় দুর্বত্তরা।
ঘটনার খবর পেয়ে পরদিন পুলিশ লাশ উদ্বার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা মোছা. মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নবীগঞ্জ থানার মামলা নং ০৫ তারিখ ০৬/০৩/২০২০ইং।
এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনার মুটিভ উদঘাটন করতে মাঠে নামে। এক পর্যায়ে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িত মুলহুতা সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ইছগাও গ্রামের ধনাই মিয়ার পুত্র সাবেক প্রেমিক মোহাম্মদ আলী রুবেল (২৬) কে তার গ্রামের বাড়ী থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত রুবেলের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র রিপনমিয়া (৩০) ও মৌলভীবাজার জেলা সদরের ঘোড়াখালগ্ রামের জমশেদ মিয়ার পুত্র রনি (২৩) কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হত্যাকান্ডের মুলহোতা মোহাম্মদ আলী রুবেল গত বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্ধী প্রদান করে। অপর আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে এসে মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ সময় এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী জানান, ধৃত রিপন মিয়ার ফুফাতো বোন জগন্নাথপুর থানার রানীগঞ্জ ইউপির জনৈকা যুবতীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ধৃত মোহাম্মদ আলী রুবেল এর। এরই মধ্যে ওই যুবতী রিপনদের বাড়ি বেড়াতে আসলে নিহত জাহেদ হোসেন এর সাথে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফলে ৬ ই মার্চ পারিবারিকভাবে বিবাহের তারিখ নির্ধারনের কথা ঠিকহয়। এই খবর জানতে পারে সাবেক প্রেমিক হত্যাকারী মোহাম্মদ আলী রুবেল। এর আগে ধৃত রিপন এবং রনির নিকট নিহত জাহেদের পাওনা টাকা নিয়ে বাকবিতম্ভা হয়। এই ঘটনাটি রুবেল জানতে পারে ওই ৩ জন মিলে জাহেদ হোসেনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে জাহেদ হোসেনের অবস্থা নির্ণয় করে ৪ মার্চ দিবাগত রাতে পরিকল্পিতভাবে জিআই পাইপ দিয়েজাহেদ হোসেনকে নির্মমভাবে খুন করে পালিয়ে যায়।